ব্রেকিং নিউজ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

রোহিঙ্গা সংকটে আসিয়ানের হস্তক্ষেপের আহ্বান এপিএইচআর’র

 

আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর) আজ ডিআরইউ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে
আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর) আজ ডিআরইউ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছবি: প্রথম আলো

ঢাকা: রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে তীব্র মানবিক সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর) দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আসিয়ান জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশ ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এপিএইচআর এই আহ্বান জানায়। ১ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ফিলিপাইনের বর্তমান ও সাবেক আইনপ্রণেতাদের সমন্বয়ে গঠিত এপিএইচআর প্রতিনিধিদল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তাদের সফরের উদ্দেশ্য ছিল শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মুখোমুখি হওয়া এবং মানবিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা।

সংবাদ সম্মেলনে এপিএইচআর জানায়, রোহিঙ্গা সংকট কোনো বিচ্ছিন্ন সমস্যা নয়, বরং আসিয়ান-সংশ্লিষ্ট একটি গুরুতর বিষয়। তারা সতর্ক করে যে এই সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে মানব পাচার, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান, এবং শরণার্থীদের অব্যাহত আগমনের কারণে আসিয়ান অঞ্চলের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে।

সংস্থাটি জানায়, আসিয়ান রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণকে উপেক্ষা করেছে, যা বর্তমানে একটি সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করেছে যে, ২০২৫ সালের নভেম্বরের পর খাদ্য রেশনের জন্য তহবিল ফুরিয়ে যাবে। শিবিরগুলোতে বসবাসরত ১৩ লাখ মানুষের জন্য প্রতি মাসে ১ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের প্রয়োজন। এপিএইচআর খাদ্য সংকট সমাধানে দ্রুত একটি মানবিক তহবিল গঠনের জন্য আসিয়ানের প্রতি অনুরোধ জানায়।

এপিএইচআর রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে একটি আসিয়ান প্ল্যাটফর্ম তৈরির পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিশু ও যুবকদের জন্য স্বীকৃত শিক্ষা এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ায় ফিলিপাইনের সরকারকে ধন্যবাদ জানায় এবং অন্যান্য আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রকেও এটি অনুসরণ করার আহ্বান জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে এপিএইচআরের সহসভাপতি ও মালয়েশিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পেরিয়ে গেলেও আসিয়ান এটিকে নিজেদের সমস্যা হিসেবে দেখছে না। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান হতে পারে এবং এই ক্ষেত্রে চীনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চার্লস সান্তিয়াগো জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা কেবল বাংলাদেশের নয়, এটি আসিয়ানেরও সমস্যা।

মালয়েশিয়ার সংসদ সদস্য ওং চেন বলেন, যেহেতু মিয়ানমার একটি আসিয়ান রাষ্ট্র, তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে তারা শরণার্থী শিবিরগুলোতে পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা দেবে।

ফিলিপাইনের সাবেক কংগ্রেস সদস্য রাউল ম্যানুয়েল রোহিঙ্গা যুবকদের জন্য শিক্ষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক মিয়ানমার গঠনে অবদান রাখার সুযোগের ওপর।

এর আগে, এপিএইচআর প্রতিনিধিদল গতকাল বুধবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে।

Post a Comment

0 Comments